প্রাণঘাতী করোনায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় চার লাখে।

রোববার (৮ মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে নয়শো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৪৯ জনে।

একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬ হাজার ৪৭৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৯১ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৬৯ লাখ ৫ হাজার ৩৭৬ জনে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৪০৬ জন এবং মারা গেছেন ১০২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৫৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯১৪ জন মারা গেছেন।

অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩২ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ৫০০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮২ লাখ ২২ হাজার ২১৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৮২৮ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ৮৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ৭০৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ২৪ হাজার ৫২৫ জন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭০ জন মারা গেছেন। গত একদিনে অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১৬৮ জন এবং মারা গেছেন ১৪ জন।

ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৫২২ জন এবং মারা গেছেন ১১৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪১৭ জন মারা গেছেন। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৬১৫ জন এবং মারা গেছেন ৩৫ জন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৫৫২ জন এবং মারা গেছেন ৮৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৫ লাখ ৪ হাজার ৩৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৩ হাজার ২৮৯ জন মারা গেছেন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৫০ জন এবং মারা গেছেন ৫৮ জন।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৬ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ হাজার ৬২২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৭৯ জনের।

করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৬৫ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ২ হাজার ৫০৮ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ২৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৯৫৩ জন এবং মারা গেছেন ৪১ জন। একই সময়ে কানাডায় নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৬৪ জন এবং মারা গেছেন ২৪ জন। গ্রিসে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৯৮ জন এবং মারা গেছেন ২০ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পোল্যান্ডে ১৪ জন, ইরানে ৮ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১১ জন, নিউজিল্যান্ডে ১১ জন, চিলিতে ১৫ জন, গুয়েতেমালায় ১৫ জন এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৪ জন মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।